মোয়াজ্জেম হোসেন জলিল ||
আলহাজ্ব মোয়াজ্জেম হোসেন জলিল ১৯৩৪ সালের ০৪ ফেব্রুয়ারী - জামালপুর জেলা, মাদারগঞ্জ উপজেলার মোসলেমাবাদ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। পিতা: ডা. ওয়াছিম উদ্দিন, মাতা: ছবেদা খাতুন। ১৯৫৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী উম্মে কুলছুম'কে জীবন সঙ্গী হিসাবে গ্রহন করেন। পারিবারিক জীবনে তাদের ০৩ মেয়ে- এবং ০৭ ছেলে-
১৯৪০ সালে মেলান্দহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির মাধ্যমে তার শিক্ষা জীবনের শুরু । ১৯৫১ সালে মেলান্দহ উমির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা ( ম্যাট্রিকুলেশন) ১৯৫৩ সালে ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজ থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা ( ইন্টারমিডিয়েট) সম্পন্ন করেন।
পারিবারিক রাজনৈতিক ঐতিহ্য সমৃদ্ধ, প্রগতিশীল চিন্তা চেতনায় বেড়ে উঠা মোয়াজ্জেম হোসেন জলিল পড়ালেখার পাশাপাশি ক্রীড়া খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতেন। আনন্দ মোহন কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি সক্রিয় কর্মী হিসাবে ভাষা আন্দোলনে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ ভক্ত - স্বাধিকার আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, ৬ দফা আন্দোলন, ঊন-সত্তুরের গণ-আন্দোলন, সত্তুরের ঐতিহাসিক নির্বাচন-সহ একাত্তুরের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি তার বাড়ির পাশে বাবার নামে ইসলামাবাদ ওয়াছিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। উক্ত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসাবে যোগদানের মধ্যদিয়ে তার কর্ম-জীবন শুরু করেন । পরবর্তীতে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত উক্ত বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া নিজ এলাকায় তার দেওয়া সম্পত্তিতে দুটি প্রাইমারী স্কুল একটি হাফেজিয়া মাদরাসা এতিম খানা এবং মোসলেমাবাদ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তুলেন।
১৯৭২-১৯৭৫ সালে গুনারীতলা ইউনিয়ন ত্রাণ কমিটির চেয়ারম্যান মনোনীত হন এবং ১৯৮২ ও ১৯৯৩ সালে যথাক্রমে দুইবার তিনি সরাসরি ভোটে ৩নং গুনারীতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে অত্যন্ত সুনামের সাথে জনসেবা ও এলাকার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন । সামাজিক অস্থিরতা দূর করতে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তিনি বিভিন্ন অভিযোগ নিষ্পত্তি করতেন।
জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সামাজিক কর্মকান্ডে নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। ২০১২ সালে পবিত্র হজব্রত পালন করেন, আল্লাহ ও নবী রাসূলের আকিদা অনুযায়ী পরিশুদ্ধ জীবনে পরবর্তীতে দ্বীনের কাজে নিজেকে সমর্পণ করেন।
২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল নিজ বাড়িতে তিনি পরলোকগমন করেন।